অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইহুদিবাদী ইসরাইলের পাশবিক হত্যাযজ্ঞকে ‘গণহত্যা’ আখ্যা দিয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত বা আইসিজে’তে দক্ষিণ আফ্রিকা যে মামলা করেছে তাতে প্রিটোরিয়ার পক্ষে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলিভিয়া। ল্যাটিন আমেরিকার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল (সোমবার) এক বিবৃতিতে এ সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দক্ষিণ আফ্রিকা জাতিসংঘের গণহত্যা কনভেনশনের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ থাকার যে পদক্ষেপ নিয়েছে তাতে যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে লা পাজ। ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার রক্ষার প্রশ্নে আইনি ব্যবস্থার আশ্রয় নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা ‘ঐতিহাসিক পদক্ষেপ’ নিয়েছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
এর ফলে ইসরাইলি দখলদারিত্ব ও আগ্রাসন থেকে মুক্তি পাওয়ার ক্ষেত্রে ফিলিস্তিনি জনগণ এক ধাপ এগিয়ে যাবে বলে বলিভিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে আন্তর্জাতিক আদালতে দক্ষিণ আফ্রিকার পাশে থাকার জন্য আন্তর্জাতিক সমাজের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
বলিভিয়া আরো বলেছে, দেশটির পাশাপাশি দক্ষিণ আফ্রিকা, বাংলাদেশ, কমোরোস ও জিবুতি ফিলিস্তিন পরিস্থিতি তদন্ত করে দেখার জন্য আলাদাভাবে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত বা আইসিসিকে অনুরোধ করেছে।
গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের চলমান গণহত্যার বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকা যে আইনি পদক্ষেপ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার পক্ষে ল্যাটিন আমেরিকার প্রথম কোনো দেশ হিসেবে বলিভিয়া যোগ দিল।
এর আগে আইসিজে গত ৪ জানুয়অরি এক বিবৃতিতে বলেছে, নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে দক্ষিণ আফ্রিকার আবেদনের বিষয়ে দুই দিন ধরে শুনানি কার্যক্রম চলবে। ১১ তারিখ আদালতে নিজেদের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করবে দক্ষিণ আফ্রিকা। পরদিন ১২ জানুয়ারি এর বিরুদ্ধে যুক্তি তুলে ধরবে ইসরায়েল।
গত ২৯ ডিসেম্বর ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আইসিজেতে মামলাটি করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। মামলায় বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েল গাজার ফিলিস্তিনিদের ওপর গণহত্যা চালিয়েছে, গণহত্যা চালাচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও গণহত্যা চালানোর ঝুঁকি সৃষ্টি করছে।’ একই সঙ্গে ইসরায়েল যেন উপত্যকাটিতে অবিলম্বে সামরিক অভিযান বন্ধ করে, সে নির্দেশ দিতে আইসিজের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আইনি সংস্থা আন্তর্জাতিক বিচার আদালত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রতিষ্ঠিত এই আদালত দুই দেশের মধ্যে বিরোধ মেটাতে পদক্ষেপ নিয়ে থাকেন। আইসিজের দেওয়া সিদ্ধান্তগুলো মেনে চলার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে তা মানার জন্য কোনো দেশের ওপর খুব কম শক্তিই খাটাতে পারেন এই আদালত।
Leave a Reply